দিল্লি থেকে সরানো হবে না ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টি-২০


দিল্লির পরিবেশ দূষণ নিয়ে এখন তোলপাড়। সেখানে বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি এমন দূষিত পরিবেশে কিভাবে অনুষ্ঠিত হবে তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। পরিবেশবাদিরা তো ইতিমধ্যেই বিসিসিআইর নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির কাছে চিঠিও পাঠিয়েছে, ম্যাচটি সরিয়ে নেয়ার জন্য। অন্যদিকে, ভারতীয় ফুটবল অধিনায়ক সুনিল ছেত্রিও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দিল্লির পরিবেশ নিয়ে।
এমন পরিস্থিতিতে যখন দিল্লি থেকে বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি সরিয়ে নেয়ার জোর দাবি উঠছে, তখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়ে দিলেন, ‘দিল্লিতেই হবে বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি। অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হবে না।’
দিওয়ালি পরবর্তী দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়েই মূলতঃ শঙ্কা দেখা দেয়; কিন্তু বৃহস্পতিবার বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দেন নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী দিল্লিতেই হবে ভারত-বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ।
ফলে আগামী ৩ নভেম্বর অর্থাৎ রোববার দিল্লির অরুণ জেটলি (সাবেক ফিরোজ শাহ কোটলা) স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ-ভারত।
সৌরভ গাঙ্গুলি এ ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিলেও দিওয়ালি পরবর্তী দিল্লির বায়ু দূষণের মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে ক্রিকেটারদের জন্য। ২০১৭’র ডিসেম্বরে দিল্লির ধোঁয়াশায় ক্রিকেট খেলতে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছিল শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের বেশিরভাগকেই মাস্ক পরে মাঠে নামতে দেখা গিয়েছিল। অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন কয়েকজন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার।
সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে ‘কেয়ার ফর এয়ার’ সংস্থার পক্ষ থেকে জ্যোতি পান্ডে এবং ‘মাই রাইট টু ব্রেদ’ সংস্থার পক্ষ থেকে রাবিনা রাজ কোহলি বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলিকে বুধবারই চিঠি পাঠিয়েছিলেন। চিঠিতে তারা লেখেন, ‘দিল্লির চরম দূষণের কথা মাথায় রেখে আপনার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অন্যত্র সরিয়ে নিন। এমন বিষাক্ত বাতাসে ৩-৪ ঘণ্টা শারীরিক পরিশ্রম সাপেক্ষ এই খেলা চালিয়ে যাওয়া ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াতে পারে। দিল্লির এই পরিবেশ আউটডোর গেমের পক্ষে কখনোই উপযুক্ত নয়।’
দিওয়ালি পর দিল্লিতে দূষণের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বহুগুণ বেড়ে যায়। সেখানে দৃশ্যমানতা এতটাই কমে যায় যে, স্বাভাবিক জনজীবন পর্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। চোখের সামনেও কিছু দেখা যায় না। নাক-মুখ দিয়ে ধুলার আস্তরণ মানবদেহে প্রবেশ করতে থাকে।
দিওয়ালির ঠিক এক সপ্তাহ পরই এই ম্যাচ নিয়ে শঙ্কা থাকলেও আশাবাদী ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লিতে দূষণের মাত্রা বেড়ে গেলেও ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ হওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। রাজ্য সরকার এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
দিওয়ালির পরের দিনই কেজরিওয়াল বলেছিলেন, ‘আশাকরি দূষণ ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। তখন দূষণ কমে যাবে। চলতি মৌসুমেই দেখেছি, দিল্লিতে যে সব ম্যাচ খেলা হয়েছে, সেগুলি নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু করা গিয়েছে।’
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে ভারত। ৩ নভেম্বর দিল্লিতে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর দু’টি ম্যাচ হবে যথাক্রমে রাজকোট ও নাগপুরে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ-ভারত। ১৪ নভেম্বর থেকে ইন্দোরে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট শুরু কলকাতায় ২২ নভেম্বর থেকে।