ঢাকাই ছবির সোনালি দিনের অপেক্ষায় সজল


আবদুন নূর সজল। নাট্যজগতের খুবই পরিচিত একটি মুখ। অবিরত ছুটে চলছেন সফলতা আর জনপ্রিয়তার তকমা নিয়ে। চরিত্রানুযায়ী নিজেকে ভাঙছেন, গড়ছেন।
তবে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য স্ক্রিনে কাজ করেন না তিনি। জানিয়েছেন, কাজ করেন ভালোলাগা থেকে। ভেতরের নেশাকে প্রাধান্য দিয়ে। নাটক কিংবা বিজ্ঞাপনের গণ্ডির মধ্যে থেমে থাকেননি।
অভিনয়ের রথ চালিয়েছেন সিনেমার মতো বিশাল ক্যানভাসের পথে। এ পথ যেন শেষ হয় না। শেষ হওয়ার প্রত্যাশাও করেন না সজল। শুধু ভাবেন কীভাবে আরও ভালো করা যায়। কীভাবে নিজকে আরও একটু ভাঙা যায়।
ভেঙে আবার গড়া যায়। ভাঙা-গড়ার অনুশীলনে সজলকে সফল বলা যায়। তা না হলে বিজ্ঞাপন, নাটক, টেলিফিল্ম কিংবা চলচ্চিত্রের পথে হাঁটতে পারতেন না। এটা নিজেও স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘জনপ্রিয় হলেও কাজ করা যায় অথবা জনপ্রিয়তার জন্য কাজ করতে হয়, বিষয়টি আমি বিশ্বাস করতে চাই না। আমি কাজ করি দর্শকদের নতুন কিছু দেয়ার জন্য।’
তবে নতুন কী? একটি নাটক শেষ করে নতুন আরেকটি নাটকে অভিনয় করা? নাটক অভিনয় শেষ করে সিনেমায় পা দেয়া? না, বিষয়টি এমন নয়।
চলচ্চিত্র, নাটক কিংবা টেলিফিল্মের নতুনত্ব হচ্ছে গল্পে, চরিত্রে আর সংলাপে। এমনটাই বিশ্বাস করেন সজল। তাই তো ভালোলাগা গল্পের নাটকে অভিনয় করেন।
বিশেষ দিন কিংবা উৎসব নয়, গল্প যখন ভালোলাগে তখনই কাজ করেন। যেমনটি অনেক ছবির প্রস্তাব পেয়ে একটি মাত্র ছবি নিয়েই ব্যস্ত আছেন বর্তমানে। নাম ‘জিন’। চরিত্রও নতুন। যে চরিত্রে আগে কখনও অভিনয় করেননি।
হ্যাঁ, সফল অভিনেতা হয়েও এখন ফটোগ্রাফিতে মনোনিবেশ করেছেন। ছবি তুলতে গিয়ে ঝামেলায়ও পড়েছেন। আবার প্রেমেও পড়েছেন। বিষয়টি বাস্তবে নয়। তার অভিনীত শুটিংচলতি ‘জিন’ ছবির চরিত্রাংশ মাত্র।
এ ছবিতে নতুন আঙ্গিকে দর্শকমহলে হাজির হবেন সজল। ৮০ ভাগ শুটিং শেষ এরই মধ্যে। তিনটি গানের কাজ বাকি আছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
নাচ! হ্যাঁ, নাচের বিষয় কিছু জানান হয়নি পাঠকদের। অভিনয়ে পারদর্শী সজলের আরও কিছু গুণ রয়েছে। যার মধ্যে নাচ অন্যতম। জিন ছবিতেও তাকে নাচতে দেখা যাবে। যেমনটি দেখা যায় বিভিন্ন শো’য়ে। তার নাচ, গান আর প্রেমের সঙ্গী হিসেবে তার সঙ্গে প্রথমবার দেখা যাবে সর্বকনিষ্ঠ চিত্রনায়িকা পূজা চেরিকে। সব মিলিয়ে এ ছবি নিয়ে সজল বেশ আশাবাদী। ভালো কিছু হবে।
এ ছবিতে প্রেমিকা পূজার সঙ্গে কি তার বিয়ে হবে? এমনটি জানতে চাইলে সজল বলেন, তা তো বলা যাবে না। ছবি দেখে দর্শক জানতে পারবেন? ছবির পরের কথা জানতে চাই। বাস্তবে আর কতদিন একা থাকা? সেখানেও তার খেয়ালিপনা। বললেন, ‘জানি না। পরিবার জানেন।
তারা যখন চাইবেন তাদের পছন্দের পাত্রীর সঙ্গেই বিয়ে হবে। সবাই জানবে। বাস্তব জীবনের বিয়ের কথা কেউ জানুক না জানুক সেটি বড় কথা নয়। বড় কথা আগামীর পরিকল্পনা। বিয়ে ছাড়াও অনেক কাজ বাকি আছে। বাকি আছে অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার।’
তবে কী চরিত্র?
কার সঙ্গে বা সে চরিত্রে অভিনয় করতে চান সজল। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বরং শ্রদ্ধেয় আফজাল হোসেন, ফেরদৌসী মজুমদার, সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে অভিনয় করতে চাই। চরিত্র বড় কথা নয়। গুণী এ শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখতে পারি। আমি শিখতে চাই।’
যদি বলি যতটুকু শিখেছেন সে অনুযায়ী বাংলা নাটকের কী অবস্থা, তবে কী বলবেন? সজল বলেন, ‘ভালো অবস্থায় তো আছে। না হলেও তো এত নির্মাতা আসত না। প্রতিদিন নতুন চরিত্র, গল্প যোগ হচ্ছে আমাদের নাটকে। সিনেমা নিয়ে এখন একটু ব্যস্ত আছি। এ ব্যস্ততা কাটিয়ে আবারও নাটকে অভিনয় করব। ভালো ভালো গল্পের চরিত্র দর্শকদের উপহার দেব।’
জনপ্রিয় অভিনেতা সজল গেল কোরবানির ঈদের পর আর নাটকে অভিনয় করছেন না। তবে তার অভিনীত নতুন নাটক নিয়মিত প্রচার হচ্ছে টিভি চ্যানেলগুলোতে। শুটিং করা আছে
অনেক নাটকের। সেগুলোও প্রচার হবে যে কোনো সময়। পাশাপাশি নতুন ছবির ব্যাপারে বেশ আগ্রহী তিনি। বলেন, ‘নাচতে নেমে ঘোমটা দেয়ার পক্ষে আমি নই। ছবিতে অভিনয় যেহেতু শুরু করেছি, তবে নিয়মিত থাকার চেষ্টা করব।
তবে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাতে রাজি নই। নাটকে যে সম্মান অর্জন করেছি, সেটা সিনেমার জন্য বিসর্জন দেব না। বরং সাফল্যের নতুন পালক যোগ করাটাই আমার লক্ষ্য। তবে স্বপ্ন দেখি একটাই, ঢাকাই ছবির সোনালি দিনে ফিরে যাওয়া।
যে দিনে আমি ছিলাম এ রঙিন ভুবনের দর্শক। বিশ্বাস করি একদিন ফিরে আসবেই। হয়তো আমি বা আমরা নই, নতুন কারও পালক উড়বে সেই স্বপ্নের আকাশে।’