নাট্যকার সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন আজম খান

বাংলাদেশ টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি (২০২৪-২০২৬) শুক্রবার (০৩ মে) বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সেমিনার কক্ষে ‘টেলিভিশন নাট্যকার সংঘ’-এর দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় এই নতুন কমিটি গঠিত হয়। নবগঠিত কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন লেখক, নাট্যকার ও অভিনেতা আজম খান। যিনি শুরু থেকে ভিবিন্ন পদ পদবী নিয়ে কমিটির সাথে যুক্ত আছেন।

টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের নতুন কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (১) হিসেবে নির্বাচিত করায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান নাট্যকার আজম খান। তিনি বলেন, আমি আমার পূর্বে সংগঠনের দায়িত্বে পালন করেছি। বর্তমান দায়িত্ব পেয়ে আমি অভিভূত এবং এ দায়িত্ব যেন সঠিকভাবে পালন করতে পারি সকলের কাছে সেই প্রার্থনা করছি। তিনি আরো জানান, সুযোগ আসলে সদস্যদের জন্য ভালো কিছু করতে পারবো বলে আশাবাদী। আজম খান দৈনিক জনকণ্ঠে চাকরির সুবাদে লেখক হয়ে ওঠেন। প্রথমে পত্রিকায় কবিতা লিখতেন। এর পরে নিয়মিত ছোট গল্প লিখেছেন। শুধু জন্কন্ঠ পত্রিকায় লিখেছেন এমন না। বিভিন্ন পত্রিকা ম্যাগাজিনে নিয়মিত সাহিত্য চর্চা করে আসছেন।

আজম খান এ প্রর্যন্ত প্রায় শতকের উপরে একক নাটকের পাশাপাশি ৬ টি ধারাবাহিক লিখেছেন। তার লেখা কবিতা সংখ্যাও অনেক। যা বিভিন্ন পত্রিকা ছাপা হয়।। এ পর্যন্ত ছোট গল্পের বই ও উপন্যাস লিখেছেন ৫টি। প্রচুর বিজ্ঞাপনের কনসেপ্ট তৈরি করেছেন। নিজেও অনেক জ্ঞিাপনে মডেল ছিলনে।

বর্তমানে ভালো মানের নাটকের পাশা –পাশি অশ্লিল সংলাপের কিছু নাটক ভাইরাল হচ্ছে। আজম খান জানান এসব ভাইরাল না হয়ে সুন্দর সংলাপ দিয়েও দর্শকের মন কেড়ে নেয়অ যায়। তিনি মনে করে এখনো পারিবারিক, সামাজিক গল্প গুলো মানুষকে আবেগ আপ্লুত করে। পারিবারিক নাটক থেকে দর্শক অনেক ধরনের শিক্ষামুলক ম্যাসেস পায়। যা যাপিত জীবনে খুব কাজে আসে।

বর্তমান সময়ের নাটকে পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে আজম খান বলেন, ‘বাজেটের কারণে আমাদের নাটকে চরিত্র সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বাবা থাকলে মা নেই, মা থাকলে বাবা নেই। পরিবার কেন্দ্রিক গল্প আমার নাটকের মূল উপজীব্য। একটা চরিত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে অনেকগুলো চরিত্রের প্রয়োজন পড়ে। এই চরিত্রগুলোই হলো নাটকের অলঙ্কার। অলঙ্কার ছাড়া ভালো নাটক নির্মাণ করা অসম্ভব। আর এসব নাটক করতে ভালো বাজেটের প্রয়োজন হয়। যা বর্তমানে সে রকম বাজেট নাই। বাজেট চলে গেছে অন্য জায়গায়। টেলিভিশন নাটক নিয়ে তিনি বলেন হয়তো একটা প্রজন্ম এসে দেখবে টেলিভিশনে কোন নাটক বিনোদন অনুষ্ঠান নেই। সে সব অনুষ্ঠান চলে গেছে। বিভিন্ন এ্যাপস, অন লাইন, ওয়েব এর বিভিন্ন সেক্টরে।

টেলিভিশন আগের মতো বাজেটে নাটক বানাচ্ছে না। হচ্ছে না যে এমন না। একটা এলিট শ্রেনীর মানুষ বিশাল অংকের টাকা দিয়ে নাটক বানাচ্ছে। কতিপয় কিছু লোকের হাতে চলে গেছে বড় বাজেটের নাটক। একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় আটিষ্টের উপর এখন নাটক নির্ভর হয়ে গেছে। আটিষ্ট যাকে ডেট দিবে সে নাটক তৈরী করতে পারছে। হাজার হাজার কোটি টাকার ইন্ডাসট্রিতে হাতে গোনা কয়েকজন আটিষ্ট। ভালো আটিষ্ট তৈরী না হলে নাটক মুখ থুবড়ে পড়বে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি (২০২৪-২০২৬) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নাট্যকার ও নাট্যনির্মাতা এজাজ মুননা, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জাকির হোসেন উজ্জ্বল। ১৯ জনরে প্যানেলে সহ-সভাপতি পদে আছেন পান্থ শাহরিয়ার, শফিকুর রহমান শান্তনু, মোস্তফা মমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন—আজম খান, টুকু মজনিউল, সাজিন আহমেদ বাবু; সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব মণি দাস, অর্থ সম্পাদক মনসুর চঞ্চল; প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামরুল আহসান; তথ্য প্রযুক্তি ও অনুষ্ঠান এলিনা শাম্মী; আইন ও কল্যাণ সম্পাদক মানস পাল; দপ্তর সম্পাদক আফরিন জেসিকা; গবেষণা ও প্রশিক্ষক সম্পাদক জুয়েল কবীর। কার্যনির্বাহী সম্পাদক পদে রয়েছেন ৪ জন। তারা হলেন ড. লিপি মনোয়ার, আহমেদ শাহাবুদ্দীন, মেজবাহ উদ্দিন সুমন, লিটু সাখাওয়াত। কি নিয়ে ব্যস্ত আছেন প্রশ্ন করলে আজম খান জানান, তিনটা ওয়েব সিরিজ ১. দয়াল ২. দি ডার্ক রিভার ৩ টার্গেট । একটি সিনেমার কাজ শুরু করছি। (খলসে ফুলের মধু) সিনেমাটির মাধ্যমে গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ ক্লাবে নাম লিখাবেন।