ঝুঁকিপূর্ণ সেন্ট মার্টিনের ‘সাড়ে ৫ হাজার লোক’ আশ্রয়কেন্দ্রে

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত থেকে রক্ষায় বঙ্গোপসাগরের বক্ষে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা শুরু করেছে প্রশাসন।

শনিবার বিকালে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “উপজেলায় মোট ১০২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় সেন্ট মার্টিনেই প্রস্তুত করা হয়েছে ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র। সেখানে সাত হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

“সেখানে সরকারি স্থাপনার পাশাপাশি দোতলা-তিনতলা হোটেল ও রিসোর্টকেও আমরা ব্যবহার করছি। এরই মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ শেল্টার সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে।”

এই অবস্থায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বহাল থাকছে।

ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ ও সেখানে থাকা পর্যটকরা দ্বীপ ছাড়া শুরু করেন। তারা ট্রলার ও স্পিডবোট করে টেকনাফে এসে আশ্রয় নেন। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকলে এবং কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে সতর্কতা সংকেত বাড়তে থাকলে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিনের পথের সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এর ফলে দ্বীপের সঙ্গে স্থলভাগের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, “এখন সাগর উত্তাল রয়েছে। কাল থেকেই এই টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন পথে নৌযান চলাচল সম্ভব ছিল না। ফলে সব ধরনের নৌযান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

“এখন যারা আসার চেষ্টা করছেন, তারা যেন সেই ব্যর্থ চেষ্টা না করেন। তাদের বলব, তারা যেন সেখানের আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে উঠেন। সেখানেই তাদের জন্য খাবারসহ অন্যান্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে সাত থেকে ১০ দিনের খাবার মজুত আছে।”

শনিবার সকাল থেকে সাগর উত্তাল দেখা গেছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সেন্ট মার্টিন জেটি ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কোনো মানুষজন নেই।

সিপিপির লোকজনকে ইজিবাইকে করে মাইকিং করতে দেখা গেছে। তারা সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে বলছে এবং মাছ ধরার নৌগুলোকে ঘাট না ছাড়ার কথাও বলছে।

মেঘলা আকাশে নিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আকতার কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা খুব চেষ্টা করছি লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য। সকাল থেকে এখানে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সব পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

“এখন সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় কারও দ্বীপ থেকে বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই সবাইকে হোটেল ও রিসোর্টে নিয়ে আসা হচ্ছে। যারা আসতে চাচ্ছে না, তাদের জোর করে নিয়ে আসা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের লোকজন যাচ্ছে এবং লোকজনকে নিয়ে আসছে। রাতের খাবারের জন্য খিচুরি রান্না করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে কোস্ট গার্ড, নেভি, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সবাই সমন্বয় করে কাজ করছেন।