‘নিখোঁজ সাংবাদিককে পিছমোড়া করে হাতকড়া লাগানো শুভ ইঙ্গিত নয়’

বাংলাদেশ ন্যাপ

৫৪ দিন নিখোঁজ থাকার পর বিপর্যস্ত সাংবাদিককে পিছমোড়া করে হাতকড়া লাগানো কোনো শুভ ইঙ্গিত বহন করে না, বরং এ ধরনের ঘটনা মানবাধিকার পরিপন্থী।

সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের প্রতি এমন আচরণের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।বুধবার (৬ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবি জানান।তারা বলেন, ব্যক্তি শত্রুতার দায় মেটাতে গিয়ে একটি দল ও সরকারের ইমেজ কীভাবে ক্ষুণ্ন হয় সাংবাদিক কাজলের পুরো ঘটনাটি তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

অপহরণের শিকার একজন সাংবাদিককে পিছমোড়া করে হাতকড়া লাগানো, একটি মামলায় জামিন পাওয়ার পর তার মুক্তি আটকাতে অপর একটি আইনের অপব্যবহার করে তাকে ফের গ্রেফতার করা এবং কারাগারে স্বজনদের দেখা করতে বাধা দেয়া এসবই কাজলের ক্ষেত্রে ঘটেছে, যা মৌলিক মানবাধিকার ও আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।নেতৃদ্বয় বলেন, প্রায় দু’মাস নিখোঁজ থাকার পর খোঁজ পাওয়ার পর তার অপহরণের সত্য উদঘাটনের চেষ্টা না করে, বরং তার বিরুদ্ধে মামলা করা প্রমাণ করে প্রকৃত সত্য গোপনের জন্য তাকে এভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা, যা এ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়। তার অপহরণের প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে হয়রানি করা ঘটনার পেছনের ঘটনাকে আড়াল করারই অপচেষ্টা মাত্র। অন্যান্য গুম বা অপহরণের ঘটনার ন্যায় এক্ষেত্রেও যেন সত্য চাপা পড়ে না যায়, এ দায়হীনতার সংস্কৃতির অবসান ঘটানোর জন্য সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে।তারা আরও বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার যখন কারাবন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে, তখন কাজলকে যে প্রক্রিয়ায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে তার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, উগ্রবাদ বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো ভয়ঙ্কর কোনো মামলার আসামি নন কাজল। তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিন্ন যে তিনটি মামলা হয়েছে, তাও কেবল ফেসবুকে মত প্রকাশের জন্য। এ ধরনের মামলায় অনেকেই জামিনে মুক্ত আছেন। তাহলে কাজলকে আটকে রাখার জন্য কেন এতো তোড়জোড়? বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একের পর এক মামলার মাধ্যমে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে ভয়ের সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা ‘মুক্ত ও স্বাধীন’ গণমাধ্যম তথা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসঙ্কেত।

দেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বিচারহীনতার প্রবণতা বাংলাদেশে গণতন্ত্রও হুমকির মুখে পড়তে পারে।